মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শেখ রাসেল দিবস ২০২৩ উদ্যাপন সংক্রান্ত নির্দেশনা
শেখ রাসেল দিবস হলো বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে পালন করা একটি জাতীয় দিবস। ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে শেখ রাসেল জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সাথে শেখ রাসেলও নিহত হন।
২০১৪ সালের ১৮ অক্টোবর প্রথমবারের মতো জাতীয়ভাবে শেখ রাসেল দিবস পালন করা হয়। দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল “শেখ রাসেল দীপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস”।
শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে সারাদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসব অনুষ্ঠানে শেখ রাসেলের জীবন ও কর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কর্মসূচি সমূহ
১৮ অক্টোবর ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২৩ ’ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপন উপলক্ষে অধিদপ্তরাধীন দপ্তর/ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে নিম্নবর্ণিত কর্মসূচি পালনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো ।
০১. সকল দপ্তর /শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ কার্যালয় / প্রাঙ্গণে শেখ রাসেল – এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে । উল্লেখ্য যে , শেখ রাসেল এর ম্যুরাল / প্রতিকৃতি সর্বনিম্ন আকার হতে হবে দৈর্ঘ্য ০৪ ফুট x প্রস্থ০৩ ফুট । সমানুপাতিক হারে বড় আকারে প্রতিকৃতি স্থাপন করা যাবে ।
০২ . সকল দপ্তর /শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২৩ ‘ উপলক্ষে শেখ রাসেল দিবস উদযাপন নীতিমালা ২০২২ অনুযায়ী আলোচনা সভা আয়োজন করবে ।
০৩ . জাতীয় কর্মসূচির সাথে সংগতি রেখে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে দোয়া মাহফিল /প্রার্থনার আয়োজন করবে ।
০৪ . ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২৩ ’ উপলক্ষে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘শেখ রাসেল দেয়ালিকা’য় গল্প, কবিতা ,সৃষ্টিশীল লেখা ও ছবি এঁকে উপস্থাপন করবে । দেয়ালিকাটির প্রতিপাদ্য হবে ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২৩ ‘। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ শেখ রাসেল দেয়ালিকার ছবি তুলে 18octoberdshe@gmail.com – এর মাধ্যমে প্রেরণ করবে ।
০৫ . শেখ রাসেল স্মরণে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গাছের চারা রোপন করবে ।
০৬ . শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এ দিবসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যেকোন কর্মসূচী স্ব-স্বব্যবস্থাপনায় আনন্দমূখর পরিবেশে আয়োজন করবে (যেমন : আনন্দ র্যালি , সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা /চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা / রচনা প্রতিযোগিতা / কুইজ প্রতিযোগিতা ইত্যাদি )।
শেখ রাসেল দিবস অনুচ্ছেদ
শেখ রাসেল দিবস
শেখ রাসেল দিবস বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে পালিত একটি জাতীয় দিবস। প্রতি বছর ১৮ অক্টোবর এই দিবসটি পালিত হয়।
১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাসভবনে শেখ রাসেল জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একাধারে একজন দক্ষ ছাত্র, একজন সুস্থ শিশু এবং একজন উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্নদ্রষ্টা। তিনি ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন এবং দেশের জন্য কাজ করার স্বপ্ন দেখতেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার সময় শেখ রাসেলও নিহত হন। তার মৃত্যু ছিল একটি জাতীয় শোকের ঘটনা।
শেখ রাসেল দিবস পালনের উদ্দেশ্য হলো শেখ রাসেলের জীবন ও আদর্শকে স্মরণ করা এবং তার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করা। এই দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসব অনুষ্ঠানে শেখ রাসেলের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও, শিশুদের জন্য নানা রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
২০২৩ সালের শেখ রাসেল দিবসের প্রতিপাদ্য হলো “শেখ রাসেল দীপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস”। এই প্রতিপাদ্য অনুসারে, শেখ রাসেল ছিলেন একজন দীপ্ত জয়োল্লাসী এবং অদম্য আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তিত্ব। তিনি তার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য অবিরাম কাজ করে গেছেন।
শেখ রাসেল দিবস শুধুমাত্র একটি জাতীয় দিবস নয়, এটি একটি অনুপ্রেরণা। শেখ রাসেলের জীবন ও আদর্শ আমাদেরকে শিখিয়েছে যে, ছোট্ট বয়সেও আমরা অনেক কিছু করতে পারি। আমরা তার আদর্শ অনুসরণ করে একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি।
শেখ রাসেলের জীবনের ঘটনা প্রবাহ
১৯৬৪
‘রাসেলের জন্মের আগের মুহূর্তগুলো ছিল ভীষণ উৎকণ্ঠার। আমি, কামাল, জামাল, রেহানা ও খোকা চাচা বাসায়। বড় ফুফু ও মেজো ফুফু মার সাথে। একজন ডাক্তার ও নার্সও এসেছেন। সময় যেন আর কাটে না। জামাল আর রেহানা কিছুক্ষণ ঘুমায় আবার জেগে ওঠে। আমরা ঘুমে ঢুলুঢুলু চোখে জেগে আছি নতুন অতিথির আগমন বার্তা শোনার অপেক্ষায়। মেজো ফুফু ঘর থেকে বের হয়ে এসে খবর দিলেন আমাদের ভাই হয়েছে। খুশিতে আমরা আত্মহারা। কতক্ষণে দেখব। ফুফু বললেন, তিনি ডাকবেন। কিছুক্ষণ পর ডাক এলো। বড় ফুফু আমার কোলে তুলে দিলেন রাসেলকে। মাথাভরা ঘন কালো চুল। তুলতুলে নরম গাল। বেশ বড় সড় হয়েছিল রাসেল।’
সূত্র: শেখ হাসিনা, ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’
১৯৬৬
কারাগারে দেখা করার সময় রাসেল কিছুতেই তাঁর বাবাকে রেখে আসবে না। এ কারণে তাঁর মন খারাপ থাকতো। কারাগারের রোজনামচায় ১৯৬৬ সালের ১৫ জুনের দিনলিপিতে রাসেলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, “১৮ মাসের রাসেল জেল অফিসে এসে একটুও হাসে না- যে পর্যন্ত আমাকে না দেখে। দেখলাম দূর থেকে পূর্বের মতোই ‘আব্বা আব্বা’ বলে চিৎকার করছে। জেল গেট দিয়ে একটা মাল বোঝাই ট্রাক ঢুকেছিল। আমি তাই জানালায় দাঁড়াইয়া ওকে আদর করলাম। একটু পরেই ভিতরে যেতেই রাসেল আমার গলা ধরে হেসে দিল। ওরা বলল আমি না আসা পর্যন্ত শুধু জানালার দিকে চেয়ে থাকে, বলে ‘আব্বার বাড়ি’। এখন ধারণা হয়েছে এটা ওর আব্বার বাড়ি। যাবার সময় হলে ওকে ফাঁকি দিতে হয়।”
১৯৬৭
কারগারের রোজনামচায় ১৯৬৭ সালের ১৪-১৫ এপ্রিলের অন্যান্য প্রসঙ্গ ছাড়াও রাসেলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, “জেল গেটে যখন উপস্থিত হলাম ছোট ছেলেটা আজ আর বাইরে এসে দাঁড়াইয়া নাই দেখে আশ্চর্যই হলাম। আমি যখন রুমের ভিতর যেয়ে ওকে কোলে করলাম আমার গলা ধরে ‘আব্বা’ ‘আব্বা’ করে কয়েকবার ডাক দিয়ে ওর মার কোলে যেয়ে ‘আব্বা’ ‘আব্বা’ করে ডাকতে শুরু করল। ওর মাকে ‘আব্বা’ বলে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ব্যাপার কি?’ ওর মা বলল,“বাড়িতে ‘আব্বা’ ‘আব্বা’ করে কাঁদে তাই ওকে বলেছি আমাকে ‘আব্বা’ বলে ডাকতে।” রাসেল ‘আব্বা’ ‘আব্বা’ বলে ডাকতে লাগল। যেই আমি জবাব দেই সেই ওর মার গলা ধরে বলে, ‘তুমি আমার আব্বা।’ আমার উপর অভিমান করেছে বলে মনে হয়। এখন আর বিদায়ের সময় আমাকে নিয়ে যেতে চায় না।”
১৯৭১
১৯৭১ সালে রাসেল তাঁর মা ও দুই আপাসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ধানমণ্ডি ১৮ নম্বর সড়কের একটি বাড়িতে বন্দি জীবন কাটিয়েছেন। পিতা বঙ্গবন্ধু তখন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি এবং বড় দুই ভাই শেখ কামাল ও শেখ জামাল চলে গেছেন মুক্তিযুদ্ধে। মা ও আপাসহ পরিবারের সদস্যরা ১৯৭১ সালের ১৭ই ডিসেম্বর মুক্ত হন। রাসেল ‘জয় বাংলা’ বলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। বাইরে তখন চলছে বিজয়-উৎসব।
১৯৭৫
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে দেশি-বিদেশি চক্রান্তে পরিবারের সদস্যদের সাথে শেখ রাসেলকেও হত্যা করা হয়। তখন রাসেল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।
FAQ
শেখ রাসেল দিবস কবে?
১৮ অক্টোবর ‘শেখ রাসেল দিবস
আমাদের ছোট রাসেল সোনা কবে প্রকাশিত হয়?
২০১৯ সালে বইটি প্রকাশিত হয়।
শেখ রাসেল এর পুরো নাম কি?
শেখ রাসেল (১৮ অক্টোবর ১৯৬৪ – ১৫ আগস্ট ১৯৭৫)
শেখ রাসেল কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে শেখ রাসেল জন্মগ্রহণ করেন