ডিজিটাল ভূমি জরিপ পদ্ধতি ২০২৩ ও ডিজিটাল সার্ভে মেশিন
ডিজিটাল ভূমি জরিপ শব্দটি আমাদের কাছে নতুনভাবে পরিচিত। পূর্বে সাধারণত ডিজিটাল পদ্ধতি অনুসরণ করা ছাড়াই ভূমি জরিপ করা হতো। কিন্তু প্রযুক্তির কল্যাণে সুষ্ঠুভাবে জরিপ করার কাজ আরো সহজ হয়ে উঠেছে। আসুন আমরা জেনে নিই ডিজিটাল ভূমি জরিপ সম্পর্কে বিস্তারিত।
ডিজিটাল ভূমি জরিপ কি
আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভূমির জরিপ পরিচালনা করাকে ডিজিটাল ভূমি জরিপ বলা হয়। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ডিজিটাল যন্ত্রপাতি (যেমন:ডাটা রেকর্ডার, জিপিএস, টোটাল স্টেশন, ড্রোন,প্লটার ইত্যাদি) ব্যবহার করে জমির সঠিক পরিমাণ,অবস্থান, আকার, ইত্যাদি নির্ধারণ করা হয়। ডিজিটাল ভূমি জরিপের কারনে বর্তমান সময়ে মাপের স্বচ্ছতা ও জমির মালিকানা নিশ্চিত হয় এবং এতে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ কমে আসে বা থাকে না বললেই চলে।
ডিজিটাল ভূমি জরিপের সুবিধাসমূহ
ডিজিটাল ভূমি জরিপের অনেক সুবিধা রয়েছে। এ সকল সুবিধার মধ্য থেকে কিছু ডিজিটাল ভূমি জরিপের সুবিধাসমূহ নিচে উপস্থাপন করা হলো:
ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ খবুই কমে আসে। জমির অবস্থান ও সঠিক মাপ সম্পর্কে অবহিত বা নির্ধারণ করা হলে ভূমিকম্প সংক্রান্ত বিরোধের সম্ভাবনা থাকে না ও কমে আসে।
ভূমির কর আদায় সহজ হয়ে থাকে। কারন ডিজিটাল ভূমি জরিপের কারণে জমির সঠিক পরিমাণ ও অবস্থান সম্পর্কে অবহিত হবে সরকার। এর ফলে ভূমির কর উক্ত মালিক ফাঁকি দিতে পারবেন না। যার ফলে ভূমি কর আদায় সহজ হয়ে থাকে।
ডিজিটাল ভূমি জরির মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনার আরো সহজ হয়ে থাকে। কারণ ডিজিটাল ভূমিকম্পের মাধ্যমে জমির রেকর্ড ও তথ্য উন্নত হয়। যা ভূমি ব্যবস্থাপনা করতে অনেকটা সহজ হয়ে যায় পূর্বের তুলনায়।
জমির মাপের স্বচ্ছতা ও জমির মালিকানা সম্পর্কে সঠিক তথ্যের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়। কখনো কখনো জমির অবস্থান ও আকার নিয়ে বিরোধ দেখা দেয় যার ফলে জমির মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন আসে। এখানে এই জরিপের মাধ্যমে মালিকানা স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়।
ডিজিটাল ভূমি জরিপের মাধ্যমে জমির সঠিক তথ্য জানা যায় বলে ভূমি ব্যবহারে সঠিক পরিকল্পনা করা সহজ হয়ে থাকে।
ভূমি জরিপ কখন হবে ২০২৩
বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে (বাংলাদেশে) ডিজিটাল ভূমি জরিপের কাজ চলমান রয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে সারা দেশে ডিজিটাল ভূমি জরিপ কার্যক্রম দ্রুত শুরু হবে।
ডিজিটাল ভূমি জরিপ পদ্ধতি
ডিজিটাল সার্ভে বলা হয় ডিজিটাল ভূমি জরিপকে। ডিজিটাল ভূমি জরিপ করার জন্য প্রথমত উক্ত জমির সঠিক অবস্থান নির্ধারণ করা হয় বা কোথায় জমে রয়েছে এই সম্পর্কে জানা যায়। এজন্য ডিজিটাল যন্ত্রপাতি হিসেবে জিপিএস বা টোটাল স্টেশন ব্যবহার করা হয়। এরপর জমির পরিমাণ ও আকার, ইত্যাদি নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। এজন্য ডিজিটাল যন্ত্রপাতি হিসেবে ড্রোন বা অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। জমির সঠিক অবস্থান ও আকার, পরিমান নির্ধারণের পর জমির জন্য ম্যাপ (মানচিত্র) তৈরি করা হয়। এই ম্যাপটি(মানচিত্রটি) ডিজিটাল ফর্ম্যাটে (আকারে) সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে।
ডিজিটাল ভূমি জরিপের মাধ্যমে জমির রেকর্ড ও তথ্য উন্নত হয়। এটি ভূমিটিকে ব্যবস্থাপনা করা সহজিকরণ ও ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ডিজিটাল সার্ভে মেশিন দাম
সাধারণত জমি মাপার মেশিনের থেকে ডিজিটাল ভূমি জরিপ বা ডিজিটাল সার্ভে মেশিনের দাম বেশি হয়ে থাকে। কারন ডিজিটাল সার্ভে করার জন্য উন্নত মেশিন ব্যবহার করা হয়। জিপিএ, ডাটা রেকর্ডার,প্লটার,ড্রোন,টোটাল স্টেশন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। এসকল সার্ভে মেশিনের দাম একএে ৫০ হাজার টাকা থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে আপনি ডিজিটাল সার্ভে মেশিনের দাম মেশিনের মানের উপর নির্ভর করে।
ডিজিটাল ভূমি জরিপের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো
দক্ষতা বৃদ্ধি : ডিজিটাল ভূমি জরিপির মাধ্যমে জরিপ কাজের উপরে দক্ষতা বৃদ্ধি হয়।
আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার: ডিজিটাল জরিপের ফলে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায় ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে সুনিশ্চিত হওয়া যায়।
সময়: ডিজিটাল ভূমি জরিপের কারণে সময় সঠিক ব্যবহার করা নিশ্চিত হচ্ছে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় ব্যয় হচ্ছে না।
নির্ভুল: ডিজিটাল জরিপের মাধ্যমে জমির সঠিক আকার ও অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়। যার সাধারণত নির্ভুল হয়ে থাকে।
ভূমি ব্যবস্থাপনা: ডিজিটাল ভূমি জরিপের মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনা অনেকটা সহজ হয়ে যায়। যা ভূমি অফিসের কার্যাবলীকে আর সহজ করে তুলে।
শেষকথা
ডিজিটাল ভূমি জরিপের মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনা আরো সহজ হয়ে যায়। ডিজিটাল ভূমি জরিপ সম্পর্কে আশা করি আমরা আপনাকে বিস্তারিত জানতে পেরেছি। ডিজিটাল ভূমি জরিপ সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।