Trick BD

সহজে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার নিয়ম [অনলাইন আবেদন] – nidw gov bd

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে চান? এনআইডি কার্ডে যদি কোনো ভুল থাকে, তবে সংশোধন করার মাধ্যমে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধন করতে পারবেন। আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

আপনি যদি নতুন ভোটার হয়ে থাকেন এবং আপনার ভোটার আইডি কার্ডে কোনো ভুল দেখেন। অর্থাৎ, আপনার আইডি কার্ডে যদি নাম/পিতার নাম/মাতার নাম অথবা ঠিকানা ভুল থাকে, তবে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন অনলাইন আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তো চলুন, পোস্টের মূল বিষয়ে ফিরে আসা যাক।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার জন্য services.nidw.gov.bd এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করে রেজিস্টার করুন বাটনে ক্লিক করে এনআইডি নাম্বার, জন্ম তারিখ এবং মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করে একাউন্ট রেজিস্টার করে একাউন্ট তৈরি করতে হবে। অতঃপর, মোবাইল থেকে NID Wallet অ্যাপ ব্যবহার করে ফেস ভেরিফিকেশন করে প্রোফাইলে ঢুকতে হবে। অতঃপর, প্রোফাইল থেকে ভুল তথ্য সংশোধন করে আবেদন ফি জমা দিয়ে সাবমিট করতে হবে।

সহজে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার নিয়ম [অনলাইন আবেদন] - nidw gov bd

আপনার সাবমিট করা আবেদনের সঙ্গে অবশ্যই প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে। আপনার নাম বা অন্য যে ভুল হয়েছে, এবং যে তথ্য পরিবর্তন করতে চান, তার জন্য প্রমাণপত্র সাবমিট করতে হবে। আপনার সাবমিট করা আবেদনে যদি সব ঠিক থাকে, তবে ৭-১৫ দিনের মাঝে সংশোধনের আবেদন অনুমোদিত হবে। এরপর, আপনি সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্রটি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

কিন্তু, যদি নির্বাচনকালীন সময়ে আবেদন করেন, তবে স্বাভাবিক এর তুলনায় বেশি সময় লাগতে পারে।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার নিয়ম

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন অনলাইন আবেদন করার জন্য services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। এরপর, রেজিস্টার করুন বাটনে ক্লিক করুন। অতঃপর, নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করার জন্য।

ধাপ ১ – এনআইডি একাউন্ট রেজিস্টার করুন

রেজিস্টার করুন বাটনে ক্লিক করার পর নতুন একটি পেজ দেখতে পাবেন। সেখানে আপনার এনআইডি কার্ডের নাম্বার লিখুন। এরপর, জন্ম তারিখ লিখুন। অতঃপর, ক্যাপচা কোড পূরণ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।

অতঃপর, আপনার বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা নির্বাচন করে দিবেন এনআইডি কার্ডে থাকা তথ্য অনুযায়ী। এরপর, পরবর্তী বাটনে ক্লিক করবেন।

এবার আপনার দেয়া মোবাইল নাম্বার দেখতে পাবেন। বার্তা পাঠান বাটনে ক্লিক করলে আপনার মোবাইল নাম্বারে একটি ওটিপি কোড সেন্ড করে দিবে। সেটি লিখে আবারও বহাল বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যাবেন। (আপনি চাইলে মোবাইল নাম্বারটি পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।)

ওটিপি কোড সঠিকভাবে লিখে বহাল বাটনে ক্লিক করলে নিচের ইমেজের মতো একটি পেজ আসবে। সেখানে একটি QR CODE দেখতে পাবেন। এবার, অন্য একটি মোবাইলে NID WALLET অ্যাপ ইন্সটল করুন প্লে স্টোর থেকে।

আরো পড়ুনঃ ডিজিটাল ভূমি জরিপ পদ্ধতি ২০২৩ ও ডিজিটাল সার্ভে মেশিন

ধাপ ২ – ফেস ভেরিফিকেশন করুন

NID WALLET অ্যাপ ওপেন করে সব পারমিশন দিয়ে QR CODE টি স্ক্যান করে নিবেন মোবাইল দিয়ে। অতঃপর, আপনার ফেস ভেরিফিকেশন করতে বলবে। মোবাইলের ক্যামেরা আপনার চেহারার সামনে ধরে ফেস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করে নিবেন। তাহলে, যে পেজে QR CODE দেখাচ্ছে, সেই পেজ থেকে আপনার একাউন্টে লগইন হয়ে যাবে অটোমেটিক।

এবার, আপনি চাইলে আপনার একাউন্টে পাসওয়ার্ড সেট করে নিতে পারেন। কিংবা, পাসওয়ার্ড সেট না করে এড়িয়ে যেতে পারেন। তাহলে, আপনার প্রোফাইলে লগইন হবে। এবার আপনার প্রোফাইল থেকে এনআইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করতে পারবেন।

ধাপ ৩ – প্রোফাইল তথ্য সংশোধন করুন

এডিট প্রোফাইল অপশনে ক্লিক করে যেসব তথ্য সংশোধন করতে চান, সকল তথ্য সংশোধন করে নিবেন। তথ্য সংশোধন করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করে ঠিকানা সংশোধন করে নিতে পারবেন। তথ্য সংশোধন করার পর আগেই কেটে দিবেন না, এখন আবেদন ফি জমা দিতে হবে।

ধাপ ৪ – জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি জমা দেওয়ার নিয়ম

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে নির্দিষ্ট পরিমাণে ফি জমা দিতে হয়। বিকাশ থেকে এনআইডি কার্ড সংশোধন ফি জমা দিতে পারবেন। ফি জমা দেয়ার জন্য, বিকাশ অ্যাপ ওপেন করুন। এরপর, নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।

  • প্রথমে বিকাশ অ্যাপ ওপেন করে পে বিল অপশনে ক্লিক করুন।
  • এবার, NID Service অপশন খুঁজে বের করে, তাতে ক্লিক করুন।
  • এখন আবেদনের ধরণ নির্বাচন করুন লেখার উপরে ক্লিক করে NID Info Correction অপশন বাছাই করুন। অতঃপর, আপনার এনআইডি কার্ডের নাম্বারটি ইংরেজিতে লিখুন।
  • এবার পরবর্তী ধাপে গিয়ে ২৩০ টাকা ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি জমা দিন।

ধাপ ৫ – প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড

সংশোধন ফি জমা দেয়ার পর আবারও উক্ত পেজে ফেরত আসবেন। এরপর, প্রয়োজনীয় যেসব ডকুমেন্ট চাইবে, সেগুলো আপলোড দিবেন। ডকুমেন্ট আপলোড দেয়ার জন্য ডকুমেন্ট গুলো স্ক্যান করে নিবেন। এরপর, আপলোড করবেন।

ডকুমেন্টগুলো লাগবে আপনার আবেদন করা তথ্য ভেরিফাই করার জন্য। আপনি ভুল সংশোধন করে সঠিক তথ্য দিচ্ছেন, এটি প্রমাণ করার জন্য আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট কিংবা পাসপোর্ট জমা দিতে পারেন। এছাড়া, আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ জমা দিতে হবে। ডকুমেন্ট আপলোড করে আবেদন সাবমিট করে দিবেন।

ধাপ ৬ – আবেদনের কপি ডাউনলোড করুন

আবেদন করার পর আপনার আবেদনের কপি ডাউনলোড করার অপশন পাবেন। সেখানে ক্লিক করে আবেদনের কপিটি পিডিএফ আকারে ডাউনলোড করে নিবেন। পরবর্তীতে এটি প্রয়োজন হতে পারে।

এই ধাপগুলো অনুসরণ করে সহজেই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করে নিতে পারবেন। এনআইডি কার্ড সংশোধন করার আবেদন করার পর অবশ্যই আপনার আবেদনের কপি ডাউনলোড করে নিবেন।

FAQ

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে কতদিন সময় লাগে?

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন আবেদন করার পর সাধারণত ৭ থেকে ১৫ দিন সময় লাগতে পারে আবেদনের তথ্য পরিবর্তন হতে। ১ মাসের মাঝেই আপনার আবেদন অনুমোদিত হয়ে যাবে যদি সঠিক তথ্য, আবেদন ফি জমা এবং সঠিক তথ্য আপলোড করেন। কিন্তু, নির্বাচনের সময় ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করলে সাধারণের থেকে বেশি সময় লাগতে পারে। 

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফরম ডাউনলোড করবো কীভাবে?

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন আবেদন করার পর সংশোধন আবেদনের ফরম ডাউনলোড করার অপশন পাবেন। যদি অপশন না আসে, তবে আপনার এনআইডি প্রোফাইল ভিজিট করুন। তাহলে, সেখানে আপনার এনআইডি সংশোধন আবেদন ফরম ডাউনলোড করতে পারবেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি কত টাকা?

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফি ২৩০ টাকা। সংশোধন ফি জমা দেয়ার জন্য বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। বিকাশ থেকে আপনার এনআইডি কার্ডের নাম্বার দেয়ার পর সংশোধন ফি জমা দিতে পারবেন।

ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে কি কি লাগে?

ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধন করার জন্য যেকোনো বোর্ড পরিক্ষার সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়। এক্ষেত্রে, জেএসসি/এসএসসি/এইচএসসি পরিক্ষার সার্টিফিকেট জমা দিতে পারেন। যদি সার্টিফিকেট জমা দিতে না পারেন, তবে পাসপোর্ট কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্স জমা দিতে পারেন। এসব ডকুমেন্ট অবশ্যই স্ক্যান করে ইমেজ আকারে আপলোড করে সাবমিট করতে হবে।

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা সংশোধন করার নিয়ম কী?

এনআইডি প্রোফাইল থেকে আপনার এনআইডি কার্ডের পুরো ঠিকানা পরিবর্তন করতে পারবেন না। শুধুমাত্র গ্রামের নাম এবং বাসার নাম্বার পরিবর্তন করতে পারবেন। যদি পুরো ঠিকানা পরিবর্তন করতে চান, তবে ঠিকানা পরিবর্তন ফরম পূরণ করে নির্বাচন কমিশন অফিসে জমা দিতে হবে।

বিয়ের পর স্বামীর নাম সংযোজনের প্রক্রিয়া কি?

উত্তরঃ নিকাহনামা ও স্বামীর আইডি কার্ড এর ফটোকপি সংযুক্ত করে অনলাইন/এনআইডি রেজিস্ট্রেশন উইং/ সংশ্লিষ্ট উপজেলা/ থানা/ জেলা নির্বাচন অফিস বরাবর আবেদন করতে হবে।

আমাদের শেষ কথা

আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি পুরো পোস্টটি পড়ে থাকেন, তবে এনআইডি কার্ডের তথ্য কীভাবে সংশোধন করতে হয় তা জানতে পেরেছেন। কোনো জায়গায় বুঝতে সমস্যা হলে অবশ্যই মন্তব্য করবেন। 

Nirob

আমি নিরব। এটি আমার বাংলা শিক্ষা বিষয়ক ওয়েবসাইট। যেখানে আমি প্রতিনিয়ত শিক্ষা ও দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত বিভিন্ন বিষয়ে লেখা প্রকাশ করি।